পৃথিবী সৃষ্টির পর এবার ই প্রথম মনে হয় এমনটা হয়েছে যে আমাদের সবার সমস্যা এক। কেয়ামতের আগেই যেন দুনিয়াটাএকটা বিশাল হাশরের মাঠ হয়ে গেছে ।
সারা দুনিয়া কে কাপিয়ে দিয়ে সগৌরবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে covid -19 বা করোনা ভাইরাস । যার প্রভাবে বড় বড় রাঘববোয়ালদের অবস্থা ও নাজেহাল । প্রতিকার নেই তাই প্রতিরোধ ই একমাত্র অবলম্বন । আর সেটি হলো আরো ঘরে থাকুন , নিরাপদে থাকুন , নিজে বাঁচুন দেশকে বাঁচান। ঘরে থেকে শুয়ে বসে দিন কাটানো ও যে অনেক কঠিন একটা কাজ তা এবারআমরা হারে হারে টের পাচ্ছি ।বর্তমান এ বহির্মুখী দুনিয়াতে মানুষ ত মানুষ পাশ্চাত্যে র গৃহপালিত কুকুর বিড়ালগুলোকেও তাদের মনীবরা প্রতিদিন নিয়ম করে বাইরে নিয়ে যায়,একটু হাওয়া লাগাতে যাতে তারা সুস্থ থাকে । প্রতিদিন বাইরে বের হওয়া মানুষ গুলো হয়ত ভাবে ঘরে বসে দম বন্ধ হয়ে মারা যাব। কিন্তু এবার হচ্ছে পুরাই বিপরীত । আর রাত ২টা য় ঘুমাতে যাওয়ার আগেও মোড়ের দোকানে চা খেতে যাওয়া বাংগালির জন্য ঘরে থাকার চেয়ে অস্র হাতে যুদ্ধ করা ও সহজ মনে হয়।
খুব অবাক হয়ে ঐদিন দেখলাম কেও একজন টাইম পাস করতে একপোয়া চালে কতগুলে চাল বা মেরি বিস্কুটের গায়ে কয়টা ফুটোতা গুনছেন । অদ্ভুত এক খেয়ালীপনায় সবাই যেন মেতে ওঠেছি আমরা । নিজে তো সাবধান হচ্ছিই না বরং অন্যেকেও সাবধানহতে দিচ্ছি না । কেও যদি সতর্ক করে একদুটো কথা বলছে তার ওপর রাগ হচ্ছি এই কারনে যে সে নাকি আতংক সৃষ্টি করছে ।করেনায় মৃত কে দাফন করতে দিচ্ছি না আবার কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তি কে দল বেঁধে দেখতে যাচ্ছি । সত্যি ই আমরা খুবই অদ্ভুত জাতি ।
মরন যখন নাকের ডগায় তখনও আমরা ব্যস্ত সমালেচনায় ।আসুন না জীবনের এই ক্রান্তি লগ্নে নিজেকে নিয়ে একটু ভাবী ।কতটুকু পেলাম জীবনে বা পাওয়ার মত যোগ্যতাইবা কতটুকু অর্জন করলাম । আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে যে বিচার বিবেচনা আমাদের দেওয়া হয়েছিল তার কতটুকু কাজে লাগিয়েছি । মোট কথা যাওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত তো?
কর্মব্যস্তময় জীবনে ইচ্ছে থাকলেও বয়স্ক মা বাবার সাথে বসে একটু খোশ গল্প করা হয় না বহুদিন , বোনটাকে বিয়ে দিয়ে ই যেন সব দায়িত্ব্য শেষ হয়ে গেল ….. খোঁজ নেওয়ার সময় ই নেই , বিকালের চা টা অনেক আগে পান করা হত জীবন সংগীর পাশে বসে বা ছোট ছেলে টা ও হয়ত বুঝে গেছে আপনার ব্যস্ততা তাই হয়ত ঘোড়া ঘোড়া খেলার আবদার ও আজকাল করে না । চলুন না হোম কোয়ারিন্টেইনের সময়টাতে একটু বিনয়ী হই। সম্পর্কের মাঝে জমে থাকা ময়লা গুলোকে পরিষ্কার করি এই সুযোগে । ছোট একটা ফোনকলে বা ভিডিও বার্তায় শেষ করি সকল দুরত্ব বা অভিমানের ।
মুসলমান হিসেবে আমরা যারা বিশ্বাসী তারা জানি যে মহামারি বা আল্লাহর গজব কেন আসে বা এমন পরিস্থিতি তে আমাদের করনীয় কি ? কেয়ামতের আগে যখন ইস্রাফিল (আ) শিংগায় ফুক দিবেন তার আগ পর্যন্ত তওবা কবুল হয় ।তাই তওবা করার এখন ও সময় আছে আমাদের হাতে। ব্যস্ততার অজুহাতে টুকটাক নামায পরলেও ফযর আর এশা ত হরহামেশাই বাদ পরে আমাদের ।চলুন না এই সুযোগে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ার যে কি শান্তি তা উপভোগ করি । রমজান ছারা ত কোরআন এ হাতই দেওয়া হয় না । প্রতিদিন ২/৪ আয়াত পড়লে কিন্তু লাভ টা আমাদের ই হবে ।মরতেই যদি হয় এবার চলুন না বিশ্বাসী হয়ে মরি তাহলে ত আখিরাত টা পাব । আর যদি ভাগ্য গুনে এ বার বেঁচে ও যাই তবু ও পাব বসবাসযোগ্য এক সুন্দর পৃথিবী যা আমাদের সবার কাম্য।